Logo
×

Follow Us

শেয়ার বাজার

হাসিনা সরকার পতনের পরই পুঁজিবাজারে বড় উত্থান

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় ২০০ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি।

ডেইলি সান রিপোর্ট, ঢাকা

Published: ০৭ আগস্ট ২০২৪

হাসিনা সরকার পতনের পরই পুঁজিবাজারে বড় উত্থান

প্রতীকী ছবি

শুনুন | ৮:৪৮ মিনিট

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্রথম দিনেই মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) শেয়ারবাজারে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় ২০০ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে এক ধরনের অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় শেয়ারবাজারেও লেনদেন বন্ধ থাকে একাধিক দিন। এমনকি পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবারও শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ থাকার কথা ছিল। তবে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আন্দোলনের মুখে পড়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান শেখ হাসিনা।

সরকার পতনের পর মঙ্গলবার দেশের সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের শুরুতেই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় সব প্রতিষ্ঠান। এতে শুরুতেই সূচকের বড় উত্থান হয়। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

তবে এরপর কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়। এতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও কমেছে। অবশ্য এর পরও ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৮৩ শতাংশ বা ৩২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৬০টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৯৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫৪২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়া সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ১১৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে ১৯৩৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫৪২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১০ জুলাইয়ের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৬৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় তিন কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

এদিকে পুঁজিবাজার কারসাজির বিচার চান বিনিয়োগকারীরা। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে শেয়ারবাজারে লুণ্ঠন করে যাঁরা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তাঁদের বিচার দাবি করেছে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে আয়োজিত বিনিয়োগকারীদের সমাবেশে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, গত ১৬ বছরে শেয়ারবাজারে লুণ্ঠন করে কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি দেশে ও বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তাঁদের লুটপাটে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। ওই সব লুণ্ঠনকারীকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তাঁরা অভিযোগ করেন, পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের অনেক নেতা জেল খেটেছেন, অনেকে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেছেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম, ইশতিয়াক আহমেদ প্রমুখ।

সৌজন্যে কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন

আরও পড়ুন