Logo
×

Follow Us

শেয়ার বাজার

শাস্তি বাড়ছে শেয়ার কারসাজিতে, খসড়া আইনে আরও যেসব প্রস্তাব

বিএসইসি আইন, ২০২৫-এর খসড়ায় পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজি বন্ধে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

ডেইলি সান রিপোর্ট, ঢাকা

Published: ০১ আগস্ট ২০২৫

শাস্তি বাড়ছে শেয়ার কারসাজিতে, খসড়া আইনে আরও যেসব প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

শুনুন | ৮:৪৮ মিনিট
  • চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে সরকারি ক্ষমতা রদ হচ্ছে
  • বাছাই কমিটির সভাপতি মনোনয়ন দেবেন প্রধান বিচারপতি
  • কারসাজিতে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান খসড়া আইনে

পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজি বন্ধে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইন, ২০২৫-এর খসড়ায়। এ ছাড়া বর্তমান আইনে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে সরকারের যে ক্ষমতা ছিল সেটি রদ করে একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায়। সেই বাছাই কমিটির প্রধান নির্বাচনেও সরকারি প্রশাসনের সংশ্লেষ রাখা হয়নি। খসড়া অনুযায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন দেবেন প্রধান বিচারপতি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আইনের খসড়াটি মতামতের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় পাঠিয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রগুলো জানায়, প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুযায়ী- পুঁজিবাজারে কোনো ব্যক্তি প্রতারণামূলক কার্যক্রম, সুবিধাভোগী ব্যবসা বা বাজার কারসাজি বা অসদুপায়ে বা অন্য কোনো উপায়ে কোনো সিকিউরিটিজ ক্রয় বা বিক্রয়কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রলুব্ধ বা প্ররোচিত করা, নিবৃত্ত করা, কার্যকর করা, যে কোনোভাবে তার সুবিধার দিকে প্রলুব্ধ বা প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করবেন-তাই শেয়ার কারসাজি বলে বিবেচিত হবে। কারসাজির কারণে বর্তমান আইনে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় এটি দ্বিগুণ করে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। 

তবে শাস্তি বাড়িয়ে পুঁজিবাজারকে কারসাজিমুক্ত করা যাবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, যারা শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে তাদের কাছে এসব শাস্তি কোনো বিষয় না। কারসাজি বন্ধে বিএসইসির নীতি সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে। 

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধে মার্জিন লোন সীমিত করতে হবে, প্লেসমেন্ট শেয়ারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে এবং ভালো মিউচুয়াল ফান্ডের কমিশন সুবিধা বাড়িয়ে দুর্বল ফান্ডের কমিশন কমাতে হবে। এসব সিদ্ধান্তের বদল হলে পুঁজিবাজারে গুণগত মানসম্পন্ন শেয়ারের চাহিদা বাড়বে। 

আইসিবির চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের অবাধে মার্জিন লোন নেওয়ার সুযোগ দিয়ে। ঋণের টাকা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা যেনতেন কোম্পানির শেয়ার কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যদি নিজের টাকায় শেয়ার কিনতেন তবে কোনোভাবেই দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কিনতেন না তারা। এজন্য মার্জিন লোন সীমিত করা দরকার। তিনি বলেন, প্লেসমেন্ট শেয়ারের কোনো দরকার ছিল না। এটা দেওয়া হয়েছে কিছু মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য।

চেয়ারম্যান ও কমিশনার পদে সরকারি ক্ষমতা রদ হচ্ছে: খসড়া আইনে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে একটি বাছাই কমিটি করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে- ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সরকার বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ দেবে। বর্তমান আইনে চেয়ারম্যান ও কমিশনার সরকার কর্তৃক নিযুক্ত করার বিধান রয়েছে। 

প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক হবেন বাছাই কমিটির সভাপতি। বাকি তিন সদস্য হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিব, যিনি কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

কমিশনার নিয়োগের সময় বিএসইসির চেয়ারম্যানও বাছাই কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করবেন। বাছাই কমিটি চেয়ারম্যান এবং প্রতিটি কমিশনার পদের জন্য আগ্রহী আবেদনকারীদের মধ্য থেকে দুজন করে প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে, যার ভিত্তিতে সরকার চূড়ান্ত নিয়োগ দেবে। চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা যথাক্রমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন। [সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন]

মন্তব্য করুন

আরও পড়ুন