প্রিন্টঃ ২৬ অক্টোবর ২০২৫
গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে বাল্য বিবাহ ও মাদককে ‘না’ বলল বসুন্ধরা শুভসংঘ
শুভসংঘের বন্ধুরা ছাড়াও এতে অংশ নেন শিক্ষক, সাংবাদিক , চিকিৎসক, এনজিও কর্মী ও অন্যান্য পেশার নারী পুরুষ
ডেইলি সান রিপোর্ট, গাইবান্ধা
প্রকাশঃ ১৫ অক্টোবর ২০২৫
শেয়ার করার বিকল্পগুলি
সমস্বরে বাল্য বিবাহ ও মাদককে ‘না’ বললেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধু এবং উপস্থিত অতিথিরা। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বসুন্ধরা শুভসংঘ পলাশবাড়ি উপজেলা শাখা বাল্য বিবাহ ও মাদকাসক্তি বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠান এবং গাইবান্ধা- পলাশবাড়ি সড়কে এক মানব বন্ধনে মিলিত হয়ে এই শ্লোগান দেয়। শুভসংঘের বন্ধুরা ছাড়াও এতে অংশ নেন শিক্ষক, সাংবাদিক , চিকিৎসক, এনজিও কর্মী ও অন্যান্য পেশার নারী পুরুষ।
এর আগে স্থানীয় পল্লী অগ্রগতি সংস্থার হল রুমে আলোচনা অনুষ্ঠানে পলাশবাড়ি উপজেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি সুরুজ হক লিটনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পলাশবাড়ি পিয়ারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান মিল্টন, প্রবীণ সাংবাদিক মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আনিছুর রহমান মানিক, শিক্ষক সাবিনা আকতার, বেসরকারী সংগঠন গণউন্নয়ন কেন্দ্রের এরিয়া ম্যানেজার রূপসা বেগম, জেলা শুভসংঘের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ বিপ্লব, উপজেলা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া আক্তার সুমনা, সাংবাদিক লাবনী আকতার, কালের কন্ঠের গাইবান্ধা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুন সহ অন্যরা।
প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান মিল্টন বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কার্যক্রম মূলত পরিবার থেকে শুরু করতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, মূলত মেয়ে শিশুরা বাল্য বিবাহের কবলে পড়ে। অনেক অভিভাবক নানা সামাজিক অর্থনৈতিক জটিলতার কারণে আপ্রাপ্তবয়স্ক কন্যার বিয়ে দিয়ে দায়িত্বমুক্ত হতে চান। এরপর ব্যহত হয় তার শিক্ষা জীবন, স্বপ্নের মৃত্যু হয়। ধীরে ধীরে দুর্বিসহ হয়ে ওঠে তার জীবন।
তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের এ ধরণের আয়োজনের প্রশংসা করে বলেন, বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সমাবেশ করে শুভসংঘ এই কাজটি অব্যাহত রাখুক।
গণউন্নয়ন কেন্দ্রের এরিয়া ম্যানেজার রূপসা বেগম বলেন, দারিদ্রপীড়িত গাইবান্ধা জেলা বাল্য বিবাহ প্রবণ এলাকা। এক শ্রেণীর মানুষ অসহায় অভিভাবকদের আইন ভেঙ্গে বাল্য বিবাহ দিতে সহযোগিতা করেন। প্রশাসনের ব্যপক চেষ্টার পরও অনেক ক্ষেত্রেই বাল্য বিবাহ ঠেকানো যাচ্ছে না। সমাজের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এলেই কেবল এই অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। তিনি নারী শিক্ষার প্রসারে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িসহ প্রায় সব এলাকাতেই মাদকের ভয়াবহ বিস্তারে কিশোর তরুণরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিদিন মহাসড়কে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নেশার সামগ্রী আটক করছে। তারপরও পাচার হচ্ছে মাদক। তিনি বলেন, বাবা মা সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো মিশে তাদের শিক্ষা সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চায় আগ্রহী করে তুলতে পারলে এই পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া সম্ভব। তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘকে মাদক বিরোধী প্রচারণায় সর্বাত্বক ভুমিকা রাখার আহ্বান জানান।
বসুন্ধরা শুভসংঘ পলাশবাড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া আক্তার সুমনা জানান, পলাশবাড়ি উপজেলা শাখা মাদক ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারী ফুটবল খেলার আয়োজন করবে। সেখান থেকে এ ব্যাপারে সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর গাইবান্ধা- পলাশবাড়ি সড়কে মানববন্ধন করেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা ও অতিথিবৃন্দ। তারা এ সময় বাল্যবিবাহ ও মাদক বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
শেয়ার করার বিকল্পগুলি
বসুন্ধরা শুভসংঘ থেকে আরও
গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে বাল্য বিবাহ ও মাদককে ‘না’ বলল বসুন্ধরা শুভসংঘ
শুভসংঘের বন্ধুরা ছাড়াও এতে অংশ নেন শিক্ষক, সাংবাদিক , চিকিৎসক, এনজিও কর্মী ও অন্যান্য পেশার নারী পুরুষ
ডেইলি সান রিপোর্ট, গাইবান্ধা
Published: ১৫ অক্টোবর ২০২৫
শেয়ার করার বিকল্পগুলি
সমস্বরে বাল্য বিবাহ ও মাদককে ‘না’ বললেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধু এবং উপস্থিত অতিথিরা। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বসুন্ধরা শুভসংঘ পলাশবাড়ি উপজেলা শাখা বাল্য বিবাহ ও মাদকাসক্তি বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠান এবং গাইবান্ধা- পলাশবাড়ি সড়কে এক মানব বন্ধনে মিলিত হয়ে এই শ্লোগান দেয়। শুভসংঘের বন্ধুরা ছাড়াও এতে অংশ নেন শিক্ষক, সাংবাদিক , চিকিৎসক, এনজিও কর্মী ও অন্যান্য পেশার নারী পুরুষ।
এর আগে স্থানীয় পল্লী অগ্রগতি সংস্থার হল রুমে আলোচনা অনুষ্ঠানে পলাশবাড়ি উপজেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি সুরুজ হক লিটনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পলাশবাড়ি পিয়ারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান মিল্টন, প্রবীণ সাংবাদিক মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আনিছুর রহমান মানিক, শিক্ষক সাবিনা আকতার, বেসরকারী সংগঠন গণউন্নয়ন কেন্দ্রের এরিয়া ম্যানেজার রূপসা বেগম, জেলা শুভসংঘের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ বিপ্লব, উপজেলা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া আক্তার সুমনা, সাংবাদিক লাবনী আকতার, কালের কন্ঠের গাইবান্ধা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুন সহ অন্যরা।
প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান মিল্টন বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কার্যক্রম মূলত পরিবার থেকে শুরু করতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, মূলত মেয়ে শিশুরা বাল্য বিবাহের কবলে পড়ে। অনেক অভিভাবক নানা সামাজিক অর্থনৈতিক জটিলতার কারণে আপ্রাপ্তবয়স্ক কন্যার বিয়ে দিয়ে দায়িত্বমুক্ত হতে চান। এরপর ব্যহত হয় তার শিক্ষা জীবন, স্বপ্নের মৃত্যু হয়। ধীরে ধীরে দুর্বিসহ হয়ে ওঠে তার জীবন।
তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের এ ধরণের আয়োজনের প্রশংসা করে বলেন, বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সমাবেশ করে শুভসংঘ এই কাজটি অব্যাহত রাখুক।
গণউন্নয়ন কেন্দ্রের এরিয়া ম্যানেজার রূপসা বেগম বলেন, দারিদ্রপীড়িত গাইবান্ধা জেলা বাল্য বিবাহ প্রবণ এলাকা। এক শ্রেণীর মানুষ অসহায় অভিভাবকদের আইন ভেঙ্গে বাল্য বিবাহ দিতে সহযোগিতা করেন। প্রশাসনের ব্যপক চেষ্টার পরও অনেক ক্ষেত্রেই বাল্য বিবাহ ঠেকানো যাচ্ছে না। সমাজের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এলেই কেবল এই অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব। তিনি নারী শিক্ষার প্রসারে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িসহ প্রায় সব এলাকাতেই মাদকের ভয়াবহ বিস্তারে কিশোর তরুণরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিদিন মহাসড়কে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নেশার সামগ্রী আটক করছে। তারপরও পাচার হচ্ছে মাদক। তিনি বলেন, বাবা মা সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো মিশে তাদের শিক্ষা সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চায় আগ্রহী করে তুলতে পারলে এই পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া সম্ভব। তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘকে মাদক বিরোধী প্রচারণায় সর্বাত্বক ভুমিকা রাখার আহ্বান জানান।
বসুন্ধরা শুভসংঘ পলাশবাড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া আক্তার সুমনা জানান, পলাশবাড়ি উপজেলা শাখা মাদক ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারী ফুটবল খেলার আয়োজন করবে। সেখান থেকে এ ব্যাপারে সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর গাইবান্ধা- পলাশবাড়ি সড়কে মানববন্ধন করেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা ও অতিথিবৃন্দ। তারা এ সময় বাল্যবিবাহ ও মাদক বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন।



